বাউফলে থেমে আছে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ

বাউফলে থেমে আছে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ

মোঃ দেলোয়ার হোসেন ,বাউফলঃ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজের নেই অগ্রগতি। ২০২১ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জায়গা বুঝে না পাওয়ার কারনে মসজিদের আংশিক জায়গায় বালি ভরাট করে কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার ফলে মসজিদের নির্মাণ কাজ থেমে আছে ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত‘মুজিব শতবর্ষ’উপলক্ষে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়।তার এ ঘোষনা অনুযায়ী গত ১০জুন সারা দেশে ৫০ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আনুষ্ঠিক ভাবে উদ্ধোধন করে প্রধানমন্ত্রী।
বাউফল উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে নির্মান কাজের দায়িত্ব পান পটুয়াখালীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ফরিদ উদ্দিন।
বাউফল ইউএন’ও অফিস সূত্রে জানা গেছে,মডেল মসজিদ নির্মাণের জায়গায় সরকারি কিছু গাছ ও একটি পরিত্যাক্ত ভবন টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য ১ বছর হয়েছে লিখিত ভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও স্থাণীয় মন্ত্রানালয় পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলা পরিষদের বর্তমান মসজিদের কাছে প্রস্তাবিত জায়গা না থাকায় বাউফল উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশে একটি পুকুর ভরাট করে মডেল মসজিদটি নির্মাণের স্থান নির্ধারন করা হয়। নির্মাণ কাজের পুকুরটি আংশিক বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। বালি দিয়ে ভরাট করার পর দীর্ঘদিন পর্যন্ত মসজিদের নির্মাণ কাজ থেমে আছে।
উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন তারই আলোকে তার কন্যা শেখ হাসিনা সারা দেশের ন্যায় বাউফল উপজেলায় প্রায় দুই বছর হয় একটি মডেল মসজিদ স্থাপণের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। মসজিদের সাইন বোর্ড উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের সামনে টানানো আছে। মডেল মসজিদ নির্মান হবে বলে  উপজেলা পরিষদের বর্তমান জামে মসজিদের কোন উন্নয়ন মূলক কাজ হচ্ছে না। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবর মুন্সির আমলে মসজিদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হওয়ার পর আর কোন কাজ হয়নি। মসজিদের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তার খসে পড়ে যাচ্ছে। মুসুল্লিদের নামাজ পড়তে অসুবিধা হয়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ। তিনি মসজিদটি নির্মাণ কাজ  দ্রুত শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ফরিদ উদ্দিন বলেন,কর্তৃপক্ষ মসজিদের জায়গা বুঝিয়ে না দেওয়ায় মসজিদের আংশিক জায়গায় বালি ফেলে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জায়গা বুঝে দিলে কাজ পূনরায় শুরু করা হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা উপ-পরিচালক মোঃ মাহাবুব আলম বলেন,একই সাথে টেন্ডার হওয়া পার্শবতী উপজেলা দশমিনা মডেল মসজিদের নির্মান কাজ চলতেছে এবং পটুয়াখালীর সদরে মডেল মসজিদটি ৩য় তলা সর্স্পূণ হয়েছে।একটি পরিত্যক্ত ভবন অপসারন না করায় ও কিছু সরকারি গাছ থাকায় মসজিদের কাজ বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন কাজের অর্থ বছর ২০২১ সালের জুন মাসে শেষ হয়েছে। বাজেট বাড়িয়ে ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ করার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
কাজের তদারকির দায়িত্ব থাকা জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান,মসজিদের জায়গায় সরকারি গাছ ও একটি ভবন অপসারন না করায় মসজিদের আংশিক জায়গায় বালি ভরাট করে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী  প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন,মসজিদের জায়গার পাশে সরকারি কিছু গাছ ও একটি পরিত্যক্ত ভবন থাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে। গাছ ও পরিত্যাক্ত ভবনটি টেন্ডারের জন্য মন্ত্রানালয় পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রানালয় থেকে অনুমোদন হয়ে আসলে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ ও পরিত্যাক্ত ভবনটি বিক্রি করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
 এবিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল আমিন বলেন,সরকারি গাছ ও পরিত্যাক্ত একটি ভবন থাকায় মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। মসজিদের জায়গাটি উপজেলা পরিষদের হওয়ায় গাছ ও পরিত্যাক্ত ভবনটি বিক্রি করতে হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। এব্যাপারে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।অনুমোদন হয়ে আসলে গাছ ও পরিত্যাক্ত ভবনটি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।